করিমগঞ্জ নিউজ :
গুনধর

ফকির বাড়ির ‘কালো ফকির’ এবার যাবে হাটে

তিন বছর ধরে যত্নে লালন-পালন করে বড় করা হয়েছে। গায়ের রং কুচকুচে কালো। বড় হয়েছে ফকির বাড়িতে। তাই আদর করে নাম রাখা হয়েছে ‘কালো ফকির’। শাহীওয়াল (ক্রস) জাতের এ ষাঁড়ের ওজন হয়েছে ১ হাজার ২০০ কেজি। ১ লাখ ১৮ হাজার টাকায় কেনা গরুটি এখন ১৫ লাখ টাকায় বিক্রির আশা। ষাঁড়টির মালিক কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জ উপজেলার গুণধর ইউনিয়নের দক্ষিণ আশাতকা গ্রামের কৃষক সবুজ ফকির।

সবুজ ফকির করিমগঞ্জ নিউজ’কে বলেন, চাচার কাছ থেকে তিন বছর আগে দুই বছর বয়সী ‘কালো ফকির’কে কিনেছিলেন তিনি। কেনার পর এটিকে সম্পূর্ণ দেশীয় পদ্ধতিতে মোটাতাজা করার প্রক্রিয়া শুরু করেন। প্রয়োজনমতো খাবার ও পরিচর্যায় এর আকৃতি বাড়তে থাকে। দিন দিন গরুটির ওজন বেড়ে এখন ১ হাজার ২০০ কেজি, অর্থাৎ ৩০ মণে এসে দাঁড়িয়েছে। পশুচিকিৎসকদের সহযোগিতায় বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে ফিতার মাপে গরুটির ওজন নিশ্চিত হওয়া গেছে। প্রতিদিন এর ওজন এখন দেড় থেকে দুই কেজি করে বাড়ছে বলে জানান সবুজ।

কৃষক সবুজ ফকির আরও বলেন, শাহীওয়াল (ক্রস) জাতের ৬০ মাস বয়সী (আট দাঁত) এ গরুকে এখন প্রতিদিন ২০ থেকে ২২ কেজি করে খাবার দিতে হচ্ছে। খাবারের তালিকায় রয়েছে মিষ্টিকুমড়া, ভুট্টা, ছোলা বুট, শুকনা খড় ও গমের ভুসি। সে হিসাবে প্রতিদিন খরচ হচ্ছে ৮০০ থেকে ১ হাজার টাকা। ষাঁড়টিকে এবারের কোরবানির পশুর হাটে তোলা হবে।

স্থানীয় বাসিন্দা আবদুস সাত্তার বলেন, কৃষক সবুজ ষাঁড়টিকে খুবই যত্ন করেন। ষাঁড়টিকে শ্যাম্পু ও সাবান দিয়ে গোসল করানো হয় প্রতিদিন। রাখেন বৈদ্যুতিক পাখার নিচে। পশুখাদ্যের দাম বাড়ায় গরুর মালিকেরা বিপাকে পড়েছেন। ফলে বেশি দাম হাঁকতে হচ্ছে।

করিমগঞ্জ উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মো. আবু হানিফ বলেন, গরুটির মালিক একজন প্রান্তিক কৃষক। দীর্ঘদিন ধরে তিনি গরু লালন–পালন করেন। গরুটি লালন-পালনে কৃষক কোনো ধরনের হরমোন বা স্টেরয়েড ব্যবহার করেননি। গরুটি দেখতে বেশ সুন্দর।

জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম জানান, আসন্ন ঈদুল আজহা উপলক্ষে জেলার বিভিন্ন এলাকায় এবার বিপুল পরিমাণ গবাদিপশু লালন–পালন হচ্ছে। অনেক জায়গায় বড় বড় গরু মোটাতাজাকরণ হচ্ছে। করিমগঞ্জের গরুটি জেলার অন্যতম বড় গরু। উপজেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয় গরুটি পালনে বিভিন্নভাবে পরামর্শ দিয়ে সহযোগিতা করেছে। কৃষক এটির ন্যায্যমূল্য পাবেন বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।