করিমগঞ্জ নিউজ :
গুজাদিয়া

যৌতুকের জন্য গৃহবধূকে হত্যা, স্বামীসহ তিনজনের ফাঁসি

করিমগঞ্জে যৌতুকের দাবিতে গৃহবধূ মোছা. ফেনা ওরফে হেনা আক্তারকে (২৮) হত্যার দায়ে স্বামীসহ তিনজনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে কিশোরগঞ্জের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১–এর বিচারক মুহাম্মদ হাবিবুল্লাহ এই রায় দেন।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত তিনজন হলেন মো. খোকন মিয়া (৩৭), জালাল মিয়া (৪৮) ও জরিনা খাতুন (৪২)। তাঁরা সবাই করিমগঞ্জ উপজেলার গুজাদিয়া ইউনিয়নের পাথারিয়াপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। এর মধ্যে খোকন মিয়া নিহত হেনা আক্তারের স্বামী। জরিনা খাতুন খোকনের বোন ও জালাল মিয়া মামাতো ভাই। মামলার তিন আসামি ইমান আলী (৬৫), কমলা খাতুন (৬২) ও সাইদুর রহমানকে (৪৩) খালাস দিয়েছেন আদালত।

জানা গেছে, ২০০৪ সালে খোকন মিয়ার সঙ্গে হেনা আক্তারের বিয়ে হয়। ২০১৫ সালে হত্যাকাণ্ডের আগে ১১ বছরের দাম্পত্য জীবনে তাঁদের দুটি কন্যাসন্তান জন্ম নেয়। ছোট মেয়ের জন্মের পর জালাল মিয়ার প্ররোচনায় হেনা আক্তারের পরিবারের কাছে এক লাখ টাকা যৌতুক দাবি করেন খোকন মিয়া। টাকা দিতে রাজি না হওয়ায় তাঁর ওপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালান খোকন মিয়ার পরিবারের সদস্যরা। নির্যাতনে অতিষ্ঠ হয়ে হেনা আক্তার বাবার বাড়ি থেকে খোকন মিয়াকে ব্যবসার জন্য ৪০ হাজার টাকা এনে দেন। এ ছাড়া হেনার বাবার বাড়ি থেকে খোকন মিয়াকে একটি দোচালা টিনের ঘর তৈরিসহ একটি গাভি কিনে দেওয়া হয়। কিছুদিন ভালো গেলেও আবার হেনার কাছে এক লাখ টাকা যৌতুক দাবি করা হয়। এতে হেনা অস্বীকৃতি জানালে স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজন পুনরায় অত্যাচার-নির্যাতন শুরু করেন। এমন পরিস্থিতিতে ২০১৫ সালের ৪ অক্টোবর রাত ২টার দিকে আসামিরা হেনা আক্তারকে ঘুম থেকে তুলে যৌতুকের জন্য গালিগালাজ করেন। একপর্যায়ে শ্বাসরোধে তাঁকে হত্যার পর লাশ বাড়িতে রেখে পালিয়ে যান তাঁরা। এ ঘটনায় হেনা আক্তারের ছোট ভাই মো. সাইফুল ইসলাম বাদী হয়ে পরদিন ৫ অক্টোবর স্বামী মো. খোকন মিয়াসহ ছয়জনকে আসামি করে করিমগঞ্জ থানায় মামলা করেন। দীর্ঘ শুনানি শেষে আজ মামলার রায় দেন বিচারক।