করিমগঞ্জ নিউজ :
Uncategorizedনিয়ামতপুর

নিয়ামতপুর-কাজলার রাস্তার কাজ বন্ধ, ধুলায় ভোগান্তি

কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জ উপজেলার নিয়ামতপুর-কাজলার ঘাট সড়কটি এখন ভোগান্তির নাম স্থানীয় লোকজনের কাছে। সড়কজুড়ে এখন ধুলার রাজত্ব। পাকা সড়কটি সংস্কার ও প্রশস্তকরণের কাজ শুরু হয়েছে প্রায় পাঁচ মাস আগে।

ঠিকাদারের গাফিলতি ও অবহেলায় কাজ তো এগোচ্ছেই না, উল্টো ঠিকাদার অর্ধেকের কম কাজ করে বেশির ভাগ কাজ বন্ধ রেখেছে প্রায় চার মাস ধরে। এতে এলাকাবাসী ধুলায় ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। পাঁচ মাস আগে কাজের শুরুতে রাস্তার কাজে নিম্ন মানের সামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগে নির্মাণকাজ বন্ধ করে দিয়েছিলেন এলাকাবাসী। পরে প্রকৌশলীরা গিয়ে নিম্ন মানের ইট বদলিয়ে আবার কাজ শুরুর অনুমতি দেয়।

করিমগঞ্জের স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) সূত্র জানায়, উপজেলার নিয়ামতপুর বাজারের নিয়ামতপুর উচ্চবিদ্যালয়ের পাশ থেকে নিয়ামতপুর কাজলার ঘাট সেতুসংলগ্ন স্থান পর্যন্ত প্রায় দেড় কিলোমিটার সড়কটির সংস্কার ও প্রশস্তকরণের কাজ পায় এস আলম নামে স্থানীয় একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। তবে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটির স্বত্বাধিকারী এস আলম কয়েক দফায় অর্ধেক রাস্তার কম অংশ কাজ করে বেশির ভাগ কাজ ফেলে রাখে চার মাসের অধিক সময় ধরে।

সম্প্রতি সরেজমিন দেখা যায়, করিমগঞ্জ ও তাড়াইল দুই উপজেলার কয়েকটি গ্রামের লাখো মানুষের যাতায়াতের এ গুরুত্বপূর্ণ রাস্তাটির নাহিরাজপাড়া এলাকা থেকে কাজলারঘাট পর্যন্ত প্রায় এক কিলোমিটার রাস্তায় খোয়া বিছিয়ে রাখা হয়েছে। ট্রাকসহ ভারী ও দ্রুতগতির যানবাহন এলেই ধুলায় পুরো এলাকা ছেয়ে যাচ্ছে। আশপাশের গাছগুলোর পাতার ওপর ধুলার আস্তরণ পড়ে রং বোঝা যাচ্ছে না। রাস্তায় একবার চলাচল করলে ধোয়া ছাড়া গায়ের কাপড় আর দ্বিতীয়বার ব্যবহারের উপযোগী থাকে না।

স্থানীয় বাসিন্দা সাইফুল ইসলাম বলেন, এ রাস্তা দিয়েই প্রায় ১০ থেকে ১৫ গ্রামের লাখো মানুষ স্থানীয় বাজারসহ জেলা শহরে যাতায়াত করেন। রাস্তার কাজ শেষ না করায় আমাদের ভোগান্তির সীমা নেই। এমনকি রাস্তার আশপাশের বাড়িতে খাবারে ধুলাবালু পড়ে। বিছানা ও বাড়ির আসবাব ধুলায় নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। অনেকের শ্বাসকষ্ট হচ্ছে।

স্থানীয় সমাজকর্মী মো. ওবায়দুল্লাহ ও পারভেজ মিয়াসহ কয়েকজন বলেন, ঠিকাদারের গাফিলতির কারণে আজ করিমগঞ্জ ও তাড়াইলের দুই উপজেলার কয়েক লাখ মানুষের ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। এ ব্যাপারে স্থানীয় লোকজন বারবার স্থানীয় প্রকৌশল অধিদপ্তরে অভিযোগ করলেও কোনো লাভ হচ্ছে না। এর আগেও কাজের শুরুতে নিম্ন মানের ইটের সামগ্রী ব্যবহারের জন্য কাজ বন্ধ করে দিয়েছিলেন স্থানীয় বাসিন্দারা। পরে নিম্ন মানের ইট বাদ দিয়ে ভালো মানের ইট আনা আর সঠিক কাজের প্রতিশ্রুতি দেওয়ায় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নির্দেশে কাজ শুরু করা হয়। কিন্তু অর্ধেকের কম রাস্তার কাজ করে বেশির ভাগ কাজ ফেলে লাপাত্তা হয়ে যান ঠিকাদার এস আলম। তাঁরা দ্রুত এ দুর্ভোগ থেকে মুক্তি চান।

ঠিকাদার এস আলম করিমগঞ্জ নিউজ’কে বলেন, কাজ বন্ধ থাকায় ধুলায় মানুষের কষ্ট হচ্ছে। কিন্তু তহবিল–সংকটসহ নানা কারণে কাজে একটু বিলম্বিত হচ্ছে। তবে পুনরায় দ্রুত কাজ শুরু হয়ে যাবে বলে তিনি আশ্বাস দেন।

করিমগঞ্জ এলজিইডির উপসহকারী প্রকৌশলী কাজী ফারুক হোসেন এ বিষয়ে গতকাল বলেন, কাজ বন্ধ থাকায় স্থানীয় ব্যক্তিদের ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। এ নিয়ে স্থানীয় সংসদ সদস্যসহ অনেকেই অভিযোগ করেছেন। তহবিল–সংকট আর বিলের দোহাই দিয়ে ঠিকাদার কাজ বন্ধ রাখতে পারেন না। টাকা যে একেবারে দেওয়া হচ্ছে না, সেটিও সঠিক নয়। আর পুরো কাজ সম্পন্ন হলে পুরো বিল তো পেয়েই যাবেন তিনি। কিন্তু তার কারণে এখন আমাদের কথা শুনতে হচ্ছে। তাঁর হয়তো অন্য আরও কয়েকটি কাজ আছে। সে জন্য আমাদের সঙ্গেও যোগাযোগ করছেন না। ফোনেও তাঁকে পাওয়া যায় না। কিন্তু নিজের দরকারের সময় তাঁর ফোনের যন্ত্রণায় আমাদের অস্থির করে ফেলেন। যাহোক ঠিকাদারকে তাগাদা দেওয়া হবে, দ্রুত যাতে গুরুত্বপূর্ণ এ রাস্তার কাজ সম্পন্ন করে মানুষের দুর্ভোগ লাগব করে।