করিমগঞ্জ নিউজ :
নিয়ামতপুরপৌর এলাকা

টিকা দিয়ে ফেরার পথে লাশ হলেন স্কুলছাত্রী

কোভিড-১৯ এর দ্বিতীয় ডোজ টিকা দিয়ে বাড়ি ফেরার পথে ট্রাক্টরচাপায় পিষ্ট হয়ে মারা গেল দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী উর্মি আক্তার।  বৃহস্পতিবার দুপুর দেড়টার দিকে পৌর গোরস্থান এলাকায় এ মর্মান্তিক দুর্ঘটনাটি ঘটে।  

এ সময় নিহত স্কুলশিক্ষার্থী উর্মি আক্তারের ছোট দুই ভাই, পিতা রতন মিয়াসহ স্বজনরা উর্মি আক্তারের লাশের পাশে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে আহাজারি ও মাতম করছিলেন। তাদের আহাজারিতে এলাকার বাতাস ভারি হয়ে ওঠে।

এমন মর্মান্তিক ও নিষ্ঠুর ঘটনায় বিক্ষুব্ধ শত শত এলাকাবাসী সড়ক অবরোধ করে দীর্ঘ আড়াই ঘণ্টা সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। এ কারণে করিমগঞ্জ-চামড়া নৌ-বন্দর সড়কে শত শত যানবাহন আটকা পড়ে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়।

খবর পেয়ে করিমগঞ্জের উপজেলা নির্বাহী অফিসার তসলিমা নূর হোসেন, পুলিশ সুপার ইফতেখারুজ্জামান ও করিমগঞ্জ থানার ওসি শামসুল আলম সিদ্দিকী ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।

জানা গেছে, করিমগঞ্জ উপজেলার ন্যামতপুর স্কুল অ্যান্ড কলেজের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী একই এলাকার রতন মিয়ার মেয়ে উর্মি আক্তার বৃহস্পতিবার জাফরাবাদে অবস্থিত রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে কোভিড-১৯ এর দ্বিতীয় ডোজ টিকা নেয়। দুপুর দেড়টার দিকে একটি অটোরিকশা করে বাড়ি ফেরার পথে করিমগঞ্জ সদরের পৌর গোরস্থান এলাকায় এ মর্মান্তিক দুর্ঘটনার কবলে পড়ে নিহত হয় সে।

করিমগঞ্জ থানার ওসি শামসুল আলম সিদ্দিকী বলেন, ঘটনার পরপরই ঘাতক ট্রাকটির চালক ও হেলপার পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় করিমগঞ্জ থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে। ঘাতক ট্রাক্টর চালক এবং হেলপারকে আটকের জন্য অভিযান অব্যাহত আছে বলেও জানিয়েছেন ওসি।          

ন্যামতপুর স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রিন্সিপাল মো. শামসুল ইসলাম জানান, তার বিদ্যাপীঠের দশম শ্রেণির মানবিক শাখার মেধাবী শিক্ষার্থী উর্মি আক্তারের এমন মৃত্যুকে কোনো অবস্থাতেই মেনে নিতে পারছেন না তারা। এ ঘটনায় প্রতিষ্ঠানটির সব শিক্ষার্থী ও শিক্ষকগণ শোকে বিহ্বল হয়ে পড়েছেন। 

তিনি জানান, এ ঘটনার প্রতিবাদ ও বিচার দাবিতে এবং এমন ঘটনা যাতে না ঘটে এজন্য তারা প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করবেন। স্মারকলিপি প্রদান করবেন উপজেলা প্রশাসনকে। 

করিমগঞ্জের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মিসেস তাসলিমা নূর হোসেনের সঙ্গে কথা হলে তিনি করিমগঞ্জ নিউজ’কে জানান, এমন মর্মান্তিক দুর্ঘটনা সবার চোখে অশ্রু ঝরিয়েছে। তিনি নিজেও অশ্রু সংবরণ করতে পারেননি। এ ঘটনা উপজেলার সব শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের হৃদয়কে নাড়া দিয়ে গেছে।

এ সময় তিনি আরও জানান, ঘাতক ট্রাক্টরটির পলাতক চালক ও হেলপারকে দ্রুততম সময়ের মধ্যে আটক করে বিচারের আওতায় আনতে পুলিশ প্রশাসনকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

| করিমগঞ্জ নিউজ |